মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করে আওয়ামী লীগ সরকার সিন্দবাদের পৌরাণিক দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রবল ক্ষমতার জোরে দেশের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিয়েছে। এখন, মানুষের কণ্ঠস্বরের কোনও মূল্য নেই; বরং তারা সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য হচ্ছে। এটা মানুষের কাঁধে বসে থাকা সিন্দবাদের দানবের মতো আচরণ।’
শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এই অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই এবং তারা প্রতিবাদ করলে তাদের অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
জিএম কাদের বলেন, ‘জাতি এখন এক সংকটময় সময় পার করছে। সংকটের গভীরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অধিকাংশ মানুষ এখন যা উপার্জন করেন তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছেন না।
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, টাকার অবমূল্যায়ন, মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানিতে সংকুচিত হওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ চাকরি হারাচ্ছে।
জাতীয় পার্টি প্রধান বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে, দেশ একটি অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি। বেশিরভাগ মানুষ কাজ পাচ্ছে না এবং খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় একদল লোক সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিপুল সম্পদ অর্জন করে ইউরোপীয় রীতিতে জীবন যাপন করছে।’
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জরিপ উদ্বৃত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। এক শ্রেণির মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই বৈষম্যের কারণে মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।’
জিএম কাদের বলেন, জাতি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে স্বাধীন একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এবং বৈষম্যহীনভাবে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ যাতে দেশের মালিক হতে পারে এবং বৈষম্য দূর করে তাদের পছন্দের সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে পারে, সেজন্য মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার সেই অর্জন যেমন আমরা হারিয়েছি, তেমনি হারিয়েছি সাধারণ মানুষের দেশের মালিকানাও।’