প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, ‘স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ থেকে ১০ জুলাই চীনে সরকারি সফর করবেন।’
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, এই সফর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘বাস্তব সহযোগিতার নতুন রূপরেখা’ তৈরি করবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে তাদের অবস্থান সমন্বয়ের সুযোগ করে দেবে।
ডিক্যাব টকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথি সই এবং যৌথভাবে বড় ধরনের সহযোগিতার অগ্রগতির ঘোষণা দেবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সফরের মাধ্যমে উভয় পক্ষ বাস্তবসম্মত সহযোগিতায় নতুন অগ্রগতি অর্জন করবে, যা উভয় দেশের জনগণের জন্য আরও সুবিধা বয়ে আনবে। আসন্ন সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
মাও নিং বলেন, নতুন মেয়াদ শুরু হওয়ার পর এবং চীনে তার শেষ সফরের পাঁচ বছর পর এটি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম চীন সফর।
সফরকালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন এবং তার সঙ্গে আলোচনা করবেন।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতার নথি সই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
মুখপাত্র বলেন, ‘দুই দেশের নেতারা কীভাবে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব গভীর করা যায় এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সহযোগিতা প্রসারিত করা যায়। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে গভীরভাবে মত বিনিময় করবেন।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
বেইজিং বলেছে, বাংলাদেশ ও চীন ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কৌশল নিয়ে আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ৪৯ বছর আগে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দুই দেশ একে অপরকে সম্মান ও সমতার সঙ্গে আচরণ করেছে। পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে। আমাদের নিজ নিজ মূল স্বার্থ সম্পর্কিত ইস্যুতে একে অপরকে সমর্থন করেছে এবং যৌথভাবে আধুনিকীকরণ করেছে।’
তিনি বলেন, তারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার একটি সুন্দর উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দুই দেশের নেতাদের কৌশলগত দিকনির্দেশনা ও অঙ্গীকারের মাধ্যমে দুই পক্ষ বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব গভীর করেছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ও বাস্তব সহযোগিতা করেছে।
মুখপাত্র বলেছেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে পাঁচটি মূলনীতির চেতনা সামনে রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। মূলনীতিগুলো হলো- শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থা গভীর করা, উন্নয়ন কৌশল আরও সমন্বয় করা, উচ্চমানের বেল্ট-রোড সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়া, বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ, বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ-বৈশ্বিক সভ্যতা উদ্যোগ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা এবং আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন স্তরে উন্নীত করা।’