ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ছেলে নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে জানেন না বাবা, বাদী চাচ্ছেন আসামিদের কাছে চাঁদা

 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফরিদপুর সদর উপজেলার মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী (২৯)। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রেীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুল হাসান লাবলু একটি মামলা করেন।

আদালতের নির্দেশে গত ১ সেপ্টেম্বর এ মামলাটি নথিভুক্ত করে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। নিহত সিরাজুল বেপারি ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের তায়জদ্দিন মুন্সীর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে। হাসিবুল হাসান লাবলু ফরিদপুরের সালথা উপজেলা রামকান্তুপুর ইউনিয়নের খলিশাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় তিনি নিজেকে নিহত সিরাজুলের খালাতো ভাই দাবি করলেও নিহতের স্বজনেরা মামলার বাদিকে চেনেন না।

ঘটনা ঢাকার হলেও মামলায় ফরিদপুর সদরে ২৩ জন, নগরকান্দায় ২৪ জন, সালথায় ৯ জন, বোয়ালমারী ২ জন ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই এ মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু আসামীদের কারও কারও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার আবেদনের কপি, ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ নামা, প্রাথমিক তথ্য বিবরণী পাঠিয়ে চাঁদাদাবী করে যোগাযোগ করতে বলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই মামলায় ১২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৩০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী, ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনকে আসামি করা হয়েছে।

ফরিদপুরে যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের মধ্যে ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র অমিতাভ বোস, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের সাবেক পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি কাজী আবদুস সোবাহান, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব সত্যজিৎ মুখার্জি, আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম মিয়া বাবু, ফরিদপুর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিধান সাহা, সালথা উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেনসহ জেলা ও উপজেলাগুলোর বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ, ব্যবসায়ী ও হিন্দু নেতৃবৃন্দ রয়েছে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেন বলেন, আমি ওইদিন (৫ আগস্ট) ফরিদপুরে সালথায় ছিলাম। কিন্তু রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় একটি হত্যা মামলায় আমাকে আসামী করে বাদী আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চঁাদা চেয়েছেন। দাবিকৃত টাকা দিলে মামলা থেকে নাম কাটিয়ে দিবে, আর দাবিকৃত টাকা না দিলে আরো মামলা করা হবে।

ফরিদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব এডভোকেট সত্যজিৎ মুখার্জি জানান, তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও মামলার নথি পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বাদীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাবিবুর রহমান লাবলু সালথার খলিশাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। বর্তমানে কোনো পদে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতি করেন বলে জানা গেছে। তার নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর লাবলু এলাকায় এসে চাঁদাবাজি শুরু করেন। বাড্ডা থানার হত্যা মামলায় ফরিদপুরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে চাঁদাবাজি করার জন্য।

জানতে চাইলে সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আসাদ মাতুব্বর বলেন, ঢাকার ঘটনায় করা মামলায় ফরিদপুরে অবস্থান করা লোকদের আসামি করা বাস্তব সম্মত নয়। এ ধরনের মামলা দিয়ে নিরাপদ ব্যক্তিদের হয়রানি করার যুক্তি নেই। মামলার সূত্র ধরে কেউ যদি অনৈতিক সুবিধা দাবি করার চেষ্টা করেন,আমি আশা করি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে ।

মামলার ব্যাপারে নিহত সিরাজুলের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার বাড্ডা থানায় কোনো মামলা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হাসিবুল হাসান লাবলু নামে এক ব্যক্তি সিরাজুলের খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে মামলা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হাসিবুল হাসানকে আমি চিনি না। এ নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার দুই ছেলের মধ্যে সিরাজুল ছোট। সিরাজুল বিবাহিত। তবে তার কোনো সন্তান হয়নি। ঢাকায় তার মালিকানাধীন একটি গ্যারেজ ছিলো। ৫ আগষ্ট জনতা বাড্ডা থানা আক্রমণ করে। পুলিশ গুলি করতে করতে থানা থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আমার ছেলে সিরাজুল। তার পকেট থেকে ফোন নিয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি সিরাজুলের বড় ভাই শাহজাহানের ফোনে কল করে এবং মৃত্যুর খবর দেয়। পর দিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিরাজুলের মরদেহ নিয়ে বিকেলে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।’

এ মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু দাবি করেন, নিহত সিরাজুলের মায়ের বোনের কোনো এক আত্মীয়ের সূত্রে তিনি খালাতো ভাই। সিরাজুলের বাবার অনুমতি নিয়েই মামলা করেছেন। সিরাজুলের বাবা তাঁকে চেনেন না জানালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আসামিদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগের কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। মামলায় ঢাকার বাইরের লোকদের নাম যুক্ত করা সঠিক হয়নি বলেও জানান।

 

 

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ছেলে নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে জানেন না বাবা, বাদী চাচ্ছেন আসামিদের কাছে চাঁদা

আপডেট সময় : ০৩:০২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফরিদপুর সদর উপজেলার মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী (২৯)। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রেীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুল হাসান লাবলু একটি মামলা করেন।

আদালতের নির্দেশে গত ১ সেপ্টেম্বর এ মামলাটি নথিভুক্ত করে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। নিহত সিরাজুল বেপারি ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের তায়জদ্দিন মুন্সীর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে। হাসিবুল হাসান লাবলু ফরিদপুরের সালথা উপজেলা রামকান্তুপুর ইউনিয়নের খলিশাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় তিনি নিজেকে নিহত সিরাজুলের খালাতো ভাই দাবি করলেও নিহতের স্বজনেরা মামলার বাদিকে চেনেন না।

ঘটনা ঢাকার হলেও মামলায় ফরিদপুর সদরে ২৩ জন, নগরকান্দায় ২৪ জন, সালথায় ৯ জন, বোয়ালমারী ২ জন ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই এ মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু আসামীদের কারও কারও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার আবেদনের কপি, ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ নামা, প্রাথমিক তথ্য বিবরণী পাঠিয়ে চাঁদাদাবী করে যোগাযোগ করতে বলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই মামলায় ১২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৩০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী, ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনকে আসামি করা হয়েছে।

ফরিদপুরে যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের মধ্যে ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র অমিতাভ বোস, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের সাবেক পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি কাজী আবদুস সোবাহান, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব সত্যজিৎ মুখার্জি, আওয়ামী লীগ নেতা মোকাররম মিয়া বাবু, ফরিদপুর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিধান সাহা, সালথা উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেনসহ জেলা ও উপজেলাগুলোর বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ, ব্যবসায়ী ও হিন্দু নেতৃবৃন্দ রয়েছে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেন বলেন, আমি ওইদিন (৫ আগস্ট) ফরিদপুরে সালথায় ছিলাম। কিন্তু রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় একটি হত্যা মামলায় আমাকে আসামী করে বাদী আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চঁাদা চেয়েছেন। দাবিকৃত টাকা দিলে মামলা থেকে নাম কাটিয়ে দিবে, আর দাবিকৃত টাকা না দিলে আরো মামলা করা হবে।

ফরিদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব এডভোকেট সত্যজিৎ মুখার্জি জানান, তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও মামলার নথি পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বাদীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাবিবুর রহমান লাবলু সালথার খলিশাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। বর্তমানে কোনো পদে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতি করেন বলে জানা গেছে। তার নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর লাবলু এলাকায় এসে চাঁদাবাজি শুরু করেন। বাড্ডা থানার হত্যা মামলায় ফরিদপুরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে চাঁদাবাজি করার জন্য।

জানতে চাইলে সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আসাদ মাতুব্বর বলেন, ঢাকার ঘটনায় করা মামলায় ফরিদপুরে অবস্থান করা লোকদের আসামি করা বাস্তব সম্মত নয়। এ ধরনের মামলা দিয়ে নিরাপদ ব্যক্তিদের হয়রানি করার যুক্তি নেই। মামলার সূত্র ধরে কেউ যদি অনৈতিক সুবিধা দাবি করার চেষ্টা করেন,আমি আশা করি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে ।

মামলার ব্যাপারে নিহত সিরাজুলের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার বাড্ডা থানায় কোনো মামলা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হাসিবুল হাসান লাবলু নামে এক ব্যক্তি সিরাজুলের খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে মামলা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হাসিবুল হাসানকে আমি চিনি না। এ নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার দুই ছেলের মধ্যে সিরাজুল ছোট। সিরাজুল বিবাহিত। তবে তার কোনো সন্তান হয়নি। ঢাকায় তার মালিকানাধীন একটি গ্যারেজ ছিলো। ৫ আগষ্ট জনতা বাড্ডা থানা আক্রমণ করে। পুলিশ গুলি করতে করতে থানা থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আমার ছেলে সিরাজুল। তার পকেট থেকে ফোন নিয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি সিরাজুলের বড় ভাই শাহজাহানের ফোনে কল করে এবং মৃত্যুর খবর দেয়। পর দিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিরাজুলের মরদেহ নিয়ে বিকেলে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।’

এ মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু দাবি করেন, নিহত সিরাজুলের মায়ের বোনের কোনো এক আত্মীয়ের সূত্রে তিনি খালাতো ভাই। সিরাজুলের বাবার অনুমতি নিয়েই মামলা করেছেন। সিরাজুলের বাবা তাঁকে চেনেন না জানালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আসামিদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগের কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। মামলায় ঢাকার বাইরের লোকদের নাম যুক্ত করা সঠিক হয়নি বলেও জানান।