ঢাকা ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:০০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

 

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে এবং ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ। সোমবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এমন মনোভাবের কথা তুলে ধরেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
সাক্ষাৎকালে হেলেন লাফেভ বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত। আগামীতে দিনগুলোতে ঢাকা ও ওয়াশিংটন আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস চলতি সপ্তাহে কনস্যুলার সেবা পুনরায় চালু করবে। চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জানান, হাজার হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম, আইনের শাসন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন হেলেন লাফেভ।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ইতোমধ্যে শুরু করেছে এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হবে।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখ করে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ফলে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের জীবিকার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ওয়াশিংটনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বহুমাত্রিক সহায়তার ক্ষেত্রে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসরত দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার মত।
অন্তর্বর্তী সরকার আমূল সংস্কার কার্যক্রম সম্পাদনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনীতিককে বলেন, ‘একটি যৌক্তিক সময় পরে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে বন্যাদুগর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দাতাগোষ্ঠীকে একটি ‘কমন প্ল্যাটফর্ম’ গঠন এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের বিষয় নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক ‘সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত’ এবং অন্তর্বর্তী সরকার সকল নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সাক্ষাৎকালে মানবাধিকার ইস্যু, সাইবার সিকিউরিটি আইন, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বিভিন্ন পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে তার সরকার বাংলাদেশে একটি প্রসিকিউটোরিয়াল সার্ভিস স্থাপনে সহায়তা করার চেষ্টা করছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০১:০০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে এবং ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ। সোমবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এমন মনোভাবের কথা তুলে ধরেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
সাক্ষাৎকালে হেলেন লাফেভ বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত। আগামীতে দিনগুলোতে ঢাকা ও ওয়াশিংটন আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস চলতি সপ্তাহে কনস্যুলার সেবা পুনরায় চালু করবে। চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জানান, হাজার হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম, আইনের শাসন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন হেলেন লাফেভ।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ইতোমধ্যে শুরু করেছে এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হবে।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখ করে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ফলে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের জীবিকার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ওয়াশিংটনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বহুমাত্রিক সহায়তার ক্ষেত্রে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসরত দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার মত।
অন্তর্বর্তী সরকার আমূল সংস্কার কার্যক্রম সম্পাদনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনীতিককে বলেন, ‘একটি যৌক্তিক সময় পরে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে বন্যাদুগর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দাতাগোষ্ঠীকে একটি ‘কমন প্ল্যাটফর্ম’ গঠন এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের বিষয় নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক ‘সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত’ এবং অন্তর্বর্তী সরকার সকল নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সাক্ষাৎকালে মানবাধিকার ইস্যু, সাইবার সিকিউরিটি আইন, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বিভিন্ন পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে তার সরকার বাংলাদেশে একটি প্রসিকিউটোরিয়াল সার্ভিস স্থাপনে সহায়তা করার চেষ্টা করছে।