সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও শত শত আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুইজন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের ষোলশহর থেকে মুরাদপুর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আকরাম (২৪) ও পথচারী ফারুক (৩৫) নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের ছাত্র আবু সাঈদ (২২) বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (আনুমানিক ২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আকাশ ও মামুন নামে দুই পথচারী ঢাকা কলেজ এলাকা থেকে লাশ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।
এছাড়া ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কোটা সংস্কার: সারা দেশে পুলিশ-ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ৬
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে কালো জিন্স ও নেভি ব্লু রঙের টি-শার্ট পরা ওই যুবককে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ’ মানুষ গুলিবিদ্ধসহ আহত হন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে আজ বিকাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বগুড়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-আরিচা, খুলনা-যশোর, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সকালে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় এবং দিনভর কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসের সামনে আন্দোলন চলাকালে চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফেরদৌস আহমেদ ও অনিক।
তাদের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।