ইসরায়েল এখনো পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা অবশ্য তাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে বাস্তবের অস্ত্র নিয়ে না হলেও নিষেধাজ্ঞার অস্ত্র নিয়ে ঠিকই পাশে দাঁড়াল ইসরায়েলের দুই পশ্চিমা মিত্র আমেরিকা ও ব্রিটেন।
ইসরায়েলে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ড্রোন কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য। বৃহস্পতিবার একযোগে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ এই দুই মিত্র।
এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে আমেরিকার অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানের ইউএভি (ড্রোন) উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ১৬ ব্যক্তি এবং দুটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এরা ইরানের শাহেদ ড্রোন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত। ওই ড্রোন ১৩ এপ্রিলের হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যও ইরানের ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত দেশটির সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।
ইসরায়েলে হামলার জেরে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপে আমেরিকার পরিকল্পনার কথা আগেই জানা গিয়েছিল। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে এমন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। একই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
এ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছিলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করাসহ আমরা আগামী দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেব বলে আশা করছি। ইরানের তেল রপ্তানির ক্ষমতা কমিয়ে তাদের অস্থিতিশীল আচরণের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা এর আগেও করেছে মার্কিন অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।’
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। তবে ইসরায়েলের দাবি, এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের অধিকাংশই প্রতিহত করা হয়েছে।
এ হামলার পরপরই ইরানকে ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ইসরায়েল। কিন্তু এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি ইসরায়েল। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক দফা বৈঠকে বসেছিল ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সেই বৈঠক শেষ হয়েছে এবং আজ বুধবার আবারও বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
এদিকে, ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এ ছাড়া ইরানে পাল্টা হামলা না করার জন্য ইসরায়েলকে আহ্বান জানাচ্ছে আমেরিকাসহ অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররাও।