ঢাকা ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মাসেতুর কল্যাণে ভোমরা স্থলবন্দরে ফল আমদানি বাড়ছে

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

 ফলসহ ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন আমদানিকারকরা

 

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা : দীর্ঘ তিন বছর পর ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু হওয়ায় সুদিন ফিরতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে।

দৈনিক ৮০-১০ ট্রাকে (২০০ টন) আঙ্গুর, আনার, আপেলসহ বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানির শুরু হওয়াতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।

নানা জটিলতায় ২০২১ সাল থেকে ফল আমদানি শূন্যের কোটায় থাকলেও সম্প্রতি তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। যার জন্য পদ্মাসেতু বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়াও বন্দরের ও কাস্টমস কর্মকর্তারা ও বন্দর ব্যবহারের জন্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার আগে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে ফল আমদানির ক্ষেত্রে ভোমরা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর ২০২১ সাল থেকে ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি কমতে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, স্কেলে টিআর ওজনে বাড়তি ছাড় না পাওয়া বন্দরের স্কেলে ওজন টেম্পারিং সুবিধা না থাকায় এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি না দিয়ে শতভাগ আদায় করাতে এবং পার্শ্ববতী বন্দরগুলোতে অনৈতিক সুবিধা পাওয়ায়তে অনেক ব্যবসায়ী অন্য বন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত হয়েছিলো।

সম্প্রতি পদ্মাসেতুর উদ্বোধন হওয়ায় ঢাকা থেকে ভোমরা স্থল বন্দরের দূরত্ব দেশের যে কোন বন্দরের তুলনায় কম ও কোলকাতা কাছাকাছি হওয়াতে এ বন্দর ব্যবহারে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।

সরকারি রাজস্ব বেশি পরিশোধ করা হলেও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক খরচ কম হবার কারণে ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে ভোমরা স্থল বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন।

 একই সাথে বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোলে সিরিয়াল জটিলতা ও তীব্র যানজটের কারণে আমদানিকারকরা ভারতীয় ফল ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানির জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

শ্রমিক আজগার আলী বলেন,  ‘কয়েকদিন একদম কাজ ছিলো না। দিনে হয়তো কোনদিন ২-১টা গাড়ি লোড আনলোড করতে পারতাম কোনদিন মোটেই কাজ হতো না অবসরে সময় পার করেছি পরিবার চালাতে কষ্ট হয়েছে। এখন বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু হয়েছে আমাদের আবার কাজ হচ্ছে সামনে ঈদ আমাদের খুব উপকার হবে’।

ট্রন্সপোট শ্রমিক সিরাজুল বলেন, ‘বন্দরে পাথর, ভূষি, খৈল,পাউডার, সহ দৈনিক অল্প করে শুকনা মরিচ,  আদা, ইত্যাদি ঢুকতো দীর্ঘদিন গাড়িগুলো বসানো ছিলো আবার ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল প্রবেশ এর ফলে গাড়ি গুলোর ভাড়া হচ্ছে।’

সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, ‘যে কোন ধরনের পণ্য আমদানির সময় স্কেলে শুধুমাত্র বন্দর বা রাজস্ব কর্মকর্তারাই নয়, আরও অনেক প্রতিনিধি থাকে। যারা আমদানির ঘোষণা ও সার্বিক প্রক্রিয়া নজরদারি করে থাকে। এখানে কোন প্রকার সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নাই। আমরা আমাদের বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছি। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বন্দরটিতে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংসস্থান হয়ছে। দীর্ঘদিন পর ভোমরা বন্দর দিয়ে আবার ফল আমদানি শুরু হয়েছে। নিয়মিত বন্দরের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।’

কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার মো এনামুল হক জানান, প্রতিদিনই ভোমরা বন্দরে আমদানি বাড়ছে, যা ইতিবাচক। এতে সরকারি রাজস্ব যেমনি বাড়ছে, তেমনি স্থানীয় শ্রমিকদেরও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে। স্কেলে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমাদের বন্দরে যে টিআরগুলো দেয়া হয় সেগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ খুলনা কমিশনারের প্রতিনিধি এখানে উপস্থিত থেকে টিআর নির্ধারণ করে দিয়েছে। তার বাইরে আমাদের বন্দরে কোন টিআর সুবিধা দেওয়া হয় না বলেও দাবি করেন তিনি।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

হজের ভিসায় নতুন বিধি-নিষেধ

পদ্মাসেতুর কল্যাণে ভোমরা স্থলবন্দরে ফল আমদানি বাড়ছে

আপডেট সময় : ০৩:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

 ফলসহ ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন আমদানিকারকরা

 

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা : দীর্ঘ তিন বছর পর ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু হওয়ায় সুদিন ফিরতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে।

দৈনিক ৮০-১০ ট্রাকে (২০০ টন) আঙ্গুর, আনার, আপেলসহ বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানির শুরু হওয়াতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।

নানা জটিলতায় ২০২১ সাল থেকে ফল আমদানি শূন্যের কোটায় থাকলেও সম্প্রতি তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। যার জন্য পদ্মাসেতু বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়াও বন্দরের ও কাস্টমস কর্মকর্তারা ও বন্দর ব্যবহারের জন্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার আগে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে ফল আমদানির ক্ষেত্রে ভোমরা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর ২০২১ সাল থেকে ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি কমতে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, স্কেলে টিআর ওজনে বাড়তি ছাড় না পাওয়া বন্দরের স্কেলে ওজন টেম্পারিং সুবিধা না থাকায় এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি না দিয়ে শতভাগ আদায় করাতে এবং পার্শ্ববতী বন্দরগুলোতে অনৈতিক সুবিধা পাওয়ায়তে অনেক ব্যবসায়ী অন্য বন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত হয়েছিলো।

সম্প্রতি পদ্মাসেতুর উদ্বোধন হওয়ায় ঢাকা থেকে ভোমরা স্থল বন্দরের দূরত্ব দেশের যে কোন বন্দরের তুলনায় কম ও কোলকাতা কাছাকাছি হওয়াতে এ বন্দর ব্যবহারে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।

সরকারি রাজস্ব বেশি পরিশোধ করা হলেও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক খরচ কম হবার কারণে ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে ভোমরা স্থল বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন।

 একই সাথে বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোলে সিরিয়াল জটিলতা ও তীব্র যানজটের কারণে আমদানিকারকরা ভারতীয় ফল ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানির জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

শ্রমিক আজগার আলী বলেন,  ‘কয়েকদিন একদম কাজ ছিলো না। দিনে হয়তো কোনদিন ২-১টা গাড়ি লোড আনলোড করতে পারতাম কোনদিন মোটেই কাজ হতো না অবসরে সময় পার করেছি পরিবার চালাতে কষ্ট হয়েছে। এখন বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু হয়েছে আমাদের আবার কাজ হচ্ছে সামনে ঈদ আমাদের খুব উপকার হবে’।

ট্রন্সপোট শ্রমিক সিরাজুল বলেন, ‘বন্দরে পাথর, ভূষি, খৈল,পাউডার, সহ দৈনিক অল্প করে শুকনা মরিচ,  আদা, ইত্যাদি ঢুকতো দীর্ঘদিন গাড়িগুলো বসানো ছিলো আবার ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল প্রবেশ এর ফলে গাড়ি গুলোর ভাড়া হচ্ছে।’

সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, ‘যে কোন ধরনের পণ্য আমদানির সময় স্কেলে শুধুমাত্র বন্দর বা রাজস্ব কর্মকর্তারাই নয়, আরও অনেক প্রতিনিধি থাকে। যারা আমদানির ঘোষণা ও সার্বিক প্রক্রিয়া নজরদারি করে থাকে। এখানে কোন প্রকার সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নাই। আমরা আমাদের বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছি। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বন্দরটিতে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংসস্থান হয়ছে। দীর্ঘদিন পর ভোমরা বন্দর দিয়ে আবার ফল আমদানি শুরু হয়েছে। নিয়মিত বন্দরের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।’

কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার মো এনামুল হক জানান, প্রতিদিনই ভোমরা বন্দরে আমদানি বাড়ছে, যা ইতিবাচক। এতে সরকারি রাজস্ব যেমনি বাড়ছে, তেমনি স্থানীয় শ্রমিকদেরও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে। স্কেলে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমাদের বন্দরে যে টিআরগুলো দেয়া হয় সেগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ খুলনা কমিশনারের প্রতিনিধি এখানে উপস্থিত থেকে টিআর নির্ধারণ করে দিয়েছে। তার বাইরে আমাদের বন্দরে কোন টিআর সুবিধা দেওয়া হয় না বলেও দাবি করেন তিনি।