ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল আকসায় ফিলিস্তিনী মুসলমানরা বেদনা ও উৎকণ্ঠা নিয়ে শুক্রবার রমজানের সবচেয়ে পবিত্র রাতটি পার করেছে।
রমজানের শেষ শুক্রবারটি ছিল একইসঙ্গে পবিত্র শবে কদরেরও রাত। যে রাতে ফেরেশতা জিব্রাইল মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা:) এর সাথে প্রথম সাক্ষাত করেন। এ রাতেই মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন নাজিল হয়।
এদিকে, জেরুজালেমের আল আকসায় প্রবেশ নিয়ে মসুল্লি ও ইসরায়েলি পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় এক লাখ ২০ হাজার লোক আল আকসায় প্রবেশ করে। এ সময়ে গ্রান্ড মুফতি মোহাম্মদ আহমাদ হুসেইন সাহসের সাথে সব মোকাবেলা করতে মুসুল্লিদের প্রতি আহ্বান জানান।
চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে আল আকসায় প্রচুর ইসরায়েলি পুলিশ মোতায়েন ছিল।
জেরুজালেমের আদিল আল আঘা (৫৩) জানিয়েছেন, আল্লার মহিমা নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকা লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে ইসরায়েলি পুলিশ ছোট্ট ড্রোন মোতায়েন করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে অনেকেই ফজরের সালাত আদায় না করেই আল আকসা থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ বলেছে, তারা সন্ত্রাস উস্কে দেয়ার অভিযোগে আট ব্যক্তিকে আটক করেছে।
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেম থেকে আসা ইয়াসের বাসার জানিয়েছেন, বৃদ্ধ ও তরুণদের পুলিশ আল আকসায় ঢুকতে দেয়নি। কেবল ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ এবং ৫০ এর বেশি বয়সী নারীদেরকেই আল আকসায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়।
অন্য সময়ে শবে কদরের রাত ঘিরে আল আকসায় এক ধরনের উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু চলতি বছরে গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় উৎসবের আমেজের বদলে আল আকসায় ছিল বেদনা ও বিষণ্ণতা।
এ কারণে ইয়াসির বাসার বলেছেন, যুদ্ধ না থাকলে সবকিছু আরো সহজ হতো।
বেথলেহেম থেকে আসা সামিহা আল খাদি (৫৫) বলেছেন, জেরুজালেম বিষণ্ণ এবং সে তার উজ্জ্বলতা হারিয়েছে। গাজায় যা চলছে তা নিয়েই আমরা সারাক্ষণ ভাবি। এক মুহুর্তের জন্যেও আমরা তা এড়াতে পারি না।
আদনান জাফর (৬০) পুরনো এ শহরে মিষ্টি তৈরি করেন। সাধারণত রমজানে তার দোকানে ভিড় লেগেই থাকত।
তিনি বলেন, এ বছরের মতো এরকম রমজান আমি আর দেখিনি। আমরা সকলেই জানি কেন? গাজা কেবল আমাদেরকেই নয়, পুরো বিশ্বকেই প্রভাবিত করেছে।