দেশের সড়ক, রেল ও নৌ-পথে যাতায়াতের সময়ে হাইওয়ের বিরতি রেস্টুরেন্টগুলো যাত্রীসাধারণের সেহরি ও ইফতারিতে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির দাবি- রেস্টুরেন্টগুলোর এরূপ গলাকাটা দামের কারণে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সংগঠনটি জানিয়েছে, সড়ক পথে দূরপাল্লার যাতায়াতে মাঝপথে বাস কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত বিরতি রেস্টুরেন্টগুলোতে বাসের যাত্রীদেরকে সেহরি ও ইফতারি করতে হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, ইফতারিতে ১টি পেয়াজু , ১টি বেগুনি, ১ পিস জিলাপি, ১/২টি খেজুর, ১টি আলুর চপ, ৫০ গ্রাম মুড়ি, ৫০ গ্রাম ছোলা, ১টি ছোট সাইজের কলা অথবা ১ পিছ ৪ ভাগের ১ অংশ আপেল, ১ গ্লাস শরবত, ২৫০এমএল ১ বোতল পানি সরবরাহ করে থাকে। এসব ইফতারি যেকোনো সাধারণ রেস্টুরেন্ট থেকে কিনতে সাধারণত ৮০ থেকে ৯০ টাকা লাগে। কিন্তু কুমিল্লা, লোহাগড়া, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের যেকোনো হাইওয়ে বিরতি রেস্টুরেন্টগুলোতে এইরকম ইফতারির প্লেট প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা হারে মূল্য আদায় করা হচ্ছে।
সংগঠনটির আরো অভিযোগ যে- যেসব কোম্পানির বাস যেসব রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতি দেয় ওইসব রেস্টুরেন্টগুলোর সাথে বাস কোম্পানির বড় অংকের বাৎসরিক কমিশন বাণিজ্য রয়েছে। এছাড়াও বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীসহ কোম্পানির অন্যান্য স্টাফেরা এসব রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন বিনামূল্য খাওয়া-দাওয়া করেন। এসব কারণে রেস্টুরেন্টগুলো যাত্রীসাধারণের কাছে পরিবেশিত প্রতিটি খাবারের গলাকাটা মূল্য আদায় করছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, একইসঙ্গে সেহরিতে ছোট ছোট ৫ পিছ গরুর মাংস এসব হোটেলগুলো ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ৩ পিস মাংস থাকলে ১ পিস হাড্ডি, ১ পিস চর্বি থাকে। ২৫০ গ্রাম সাইজের ১ পিস তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ২০০ গ্রাম সাইজের রুই ২৫০ টাকা, ২০০ গ্রাম ওজনের ২ পিস পাবদা ২০০ টাকা হারে মূল্য আদায় করা হচ্ছে। অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে কেউ ১ প্লেট ভাত খেলেও ৩ প্লেট ভাতের বিল আদায়ের অপকৌশল হিসেবে জনপ্রতি ভাতের বিল ৫০-৬০ টাকা হারে আদায় করছেন। দেড় কাপের সমপরিমাণ পাতলা ডালের মূল্য ২০ টাকা আদায় করছেন যা ১ প্লেট ভাত কোনোরকমে ভেজানো যায়।
রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনে যাত্রীদের সেহরি-ইফতারির মূল্য তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি কোচে লাগানো এবং রশিদ প্রদান করে মূল্য আদায়ের নিয়ম লঙ্ঘন করে ইচ্ছেমত মূল্য আদায় করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটির আরো অভিযোগ যে- নৌ-পথের বিলাশবহুল লঞ্চের কেন্টিনগুলোতে পরিবেশিত সেহরি ও ইফতারিরও গলাকাটা মূল্য আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে সাধারণ যাত্রীদের সেহরি ও ইফতারির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।