সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস হওয়ার চার বছর পর কার্যকরের ঘোষণা দিল ভারত। সোমবার (১১ মার্চ) দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনটি কার্যকরের কথা জানায়।
লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই বিতর্কিত এ আইনটি কার্যকর করা হলো। এই আইনটিকে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি আন্দোলনও হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদির সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব আইনটি সংশোধনী বিল পাস করে। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সই করেন। তবে নরেন্দ্র মোদির সরকার চার বছর পর সিএএ বাস্তবায়নের আদেশ দিল।
এ আইনের অধীনে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া অনিবন্ধিত অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সিএএ কার্যকর হওয়ায় ওই তিন দেশ থেকে আগত শরণার্থীরা ভারতীয় আইন অনুযায়ী, ভিসা বা পাসপোর্টের মতো নথি না থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নির্বাচনের আগে পুরো ভারতে সিএএ কার্যকর করা হবে। এই আইনের মাধ্যমে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না।
এর আগে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছিল, নাগরিকত্ব পেতে টানা এক বছর ভারতে থাকতে হবে। এছাড়া বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সংশোধনী আইনে সেই ১১ বছরের সময়কাল কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইনের মাধ্যমে আবেদনকারীদের একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। কবে তিনি ভারতে প্রবেশ করেছেন, সে তথ্যও সেখানে দিতে হবে।
ভারতের বিরোধী দলগুলো সিএএ আইনের বিরোধীতা করে আসছে। বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলো প্রথম থেকেই বলে আসছে, এই আইন অসাংবিধানিক এবং বিভাজনকামী।
সিএএ থেকে মুসলিম ধর্মালম্বীদের বাদ দেওয়া এবং তামিল উদ্বাস্তুদের বাদ দেওয়া নিয়ে মূলত বিরোধীদের আন্দোলনের সুর তীব্র হয়ে ওঠে।