নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও গ্রামাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে যারা নিজেরাই খাদ্য উৎপাদন করে, তারা তেমন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘দাম বেড়েছে এবং এর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষেরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে গ্রামে যারা নিজেদের জন্য উৎপাদন করতে পারেন, তাদের খুব একটা কষ্ট হয় না। তাই তাদের থেকে কোনো দুর্দশার খবর পাওয়া যায় না। তারপরও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচিত ড. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাষ্ট্র পরিচালিত টিসিবি তাদের বিদ্যমান জনবল দিয়ে জনগণকে সেবা প্রদান করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
দেশে প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমদানিও করছি। যত টাকাই লাগুক না কেন, রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হলেও আমরা খরচ করছি।’
জনগণের কল্যাণ তার সরকারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
নাটোর থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র এমপি আবুল কালামের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সব সময় জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সচেষ্ট।
শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ‘আমরা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, সরিষা, বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য এবং শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়ায় দেশে আমদানি মূল্যস্ফীতির চাপ পড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সৃষ্ট সংঘাত বাজার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণের ওপর এর প্রভাব প্রশমনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
সম্প্রতি টাকার বিনিময় হারের দর কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনতে শিগগিরই ক্রলিং পেগ ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালা গ্রহণ করা হবে।’
এই পদ্ধতি বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্বাভাবিক ওঠানামা রোধ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পদ্ধতি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে।