যথাযোগ্য মর্যাদায় হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
আজ সোমবার জন্মাষ্টমীতে দেশের বন্যার্তদের জন্য প্রার্থনা করা হয়। আর উৎসবের খরচ কমিয়ে সেই অর্থ বন্যাদুর্গতদের কাছে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া প্রার্থনায় দেশ ও জাতির শান্তি কামনা করা হয়।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, শ্রীমদ্ভাগত পাঠ, সন্ধ্যায় আরতি, কীর্তন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সোমবার সকাল ৮টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সকাল ৯ টার দিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পালসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা গুরুবরণ করেন।
দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের জন্য এ দিন মথুরায় কংসের কারাগারে মা দেবকী ও বাবা বসুদেবের ঘর আলো করে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ- এই বিশ্বাস ধারণ করেই দিবসটি উদযাপন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিকেল ৩টার দিকে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এর আগে রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আলোচনা সভা শেষে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
পরে সেখান থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি পলাশী মোড়, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্ত্বর, হাইকোর্ট, বঙ্গবাজার, নগর ভবন, গোলাপশাহ্ মাজার, গুলিস্তান মোড়, নবাবপুররোড, রায় সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ্ পার্কে গিয়ে শেষ হয়।
জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রায় শ্রীকৃষ্ণের রথ, রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি, কংসের জেলখানা, রাম-সীতা, লব-কুশসহ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা অংশের আদলে সেজে শোভাযাত্রায় অংশ নেন ভক্তরা।
শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ঢাকা মহানগর ছাড়াও আশ-পাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ, ঘোড়ার গাড়ী নিয়ে ভক্তরা আজিমপুর, পলাশী মোড়, ইডেন কলেজ মোড়সহ আশপাশের এলাকায় মিলিত হন।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এ উপলক্ষে সোমবার ছিল সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান মালা।
এছাড়া রাজধানীর রমনা কালীমন্দির, রাজারবাগের বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামন্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।