ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুরু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে ইউএনবির সংবাদাতা জানান, সংঘর্ষটি বিকাল ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ স্থায়ী হয়। আন্দোলনকারীদেরকে লাঠি, স্টাম্প ও লোহার রড দিয়ে পেটাতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। এতে অনেক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢামেক হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে এ প্রতিবেদক জানান, এখন পর্যন্ত আহত ১২০ শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ইডেন মহিলা কলেজ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কয়েকজন কর্মী সমাবেশে যোগ দিতে বের হওয়ার সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা গেটে তালা লাগিয়ে তাদের বাধা দেন। এতে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
আহতরা হলেন- সায়মা আফরোজ, শাহিনুর সুমি, সুমাইয়া আক্তার ও সানজিদা হক। আহতদের মধ্যে একজনকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের বিরোধিতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনার মুখে রবিবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে শুরু করেন। বিক্ষোভো অংশ নিতে ছাত্রীদের হলসহ সব আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এর আগে চীন সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা চাকরি পাবে না, রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে? এটা জাতির কাছে আমার প্রশ্ন।’