ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন দেশটির সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান।
শনিবার(৬ জুলাই) ইরানের নির্বাচনি সদর দপ্তরের মুখপাত্র মোহসেন ইসলামি তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সংস্কারপন্থী পেজেশকিয়ান ও বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের সাবেক প্রধান আলোচক সাঈদ জালিলির মধ্যে অনুষ্ঠিত রানঅফের (দ্বিতীয় দফা) ফলাফল প্রকাশের সময় মোহসেন ইসলামি এ ঘোষণা দেন।
ইসলামি বলেন, রানঅফে মোট ভোট পড়েছে ৩ কোটি ৫ লাখ ৩০ হাজার ১৫৭টি। তবে ব্যবহৃত ব্যালটের সংখ্যা যোগ করে দাঁড়িয়েছিল ৩ কোটি ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩১টিতে। এতে ভোটদানের হার ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
মোহসেন ইসলামি বলেন, এর মধ্যে পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০৩ ভোট। আর সাঈদ জালিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯ ভোট।
স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দেশি-বিদেশি প্রায় ৫৯ হাজার ভোটকেন্দ্রে এ কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় (গ্রিনিচ মান সময় ১৪:৩০ মিনিট) এটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তিনবার সময় বাড়ানো হয়। আর প্রতিবারই সময় দুই ঘণ্টা করে বাড়ানো হয়।
ভোট গ্রহণ শুরুর পরপরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতু্ল্লাহ আলি খামেনি তেহরানের একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন এবং নির্বাচনকে ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়’ বলে অভিহিত করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
৬৯ বছর বয়সি পেজেশকিয়ান একজন কার্ডিয়াক সার্জন এবং বর্তমানে দেশটির সংসদের একজন আইনপ্রণেতা। তিনি ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সংসদের প্রথম ডেপুটি স্পিকার এবং ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।
তিনি ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন। ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট পদে তার দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় পেজেশকিয়ান ১ কোটি ৪১ লাখ ৫ হাজার ৯৯১ ভোট পেয়েছেন। যা নাগরিকদের প্রদত্ত মোট ভোটের ৪২ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে ৫৮ বছর বয়সি জালিলি বর্তমানে ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি ডিসকার্নমেন্ট কাউন্সিলের সদস্য। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব ছিলেন এবং ইরান ও বিশ্বশক্তির মধ্যে পারমাণবিক আলোচনায় প্রধান আলোচক ছিলেন।
তিনি ২০১৩ সালের জুন মাসে ইরানের একাদশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। তিনি ২০২১ সালেও প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে নির্বাচনের আগে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পক্ষে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় জালিলি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৮ ভোট বা ৩৮ শতাংশের বেশি ভোট পান।