পেসমেকার স্থাপনের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ইউএনবিকে জানান, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে আজ (সোমবার) বিকাল পৌনে ৪টায় ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে সিসিইউ সুবিধাসহ একটি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তার স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যালোচনা করার পরে মেডিকেল বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান ডা. জাহিদ।
তিনি আরও জানান, চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে কেবিনে চিকিৎসা নেবেন খালেদা জিয়া।
এর আগে গতকাল (২৩ জুন) বিকালে সফলভাবে তার বুকে ‘স্থায়ী পেসমেকার’ স্থাপন করা হয়। পরে চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়।
পেসমেকার অপারেশনের পর থেকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি না হওয়ায় তিনি স্থিতিশীল আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
এছাড়াও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার আরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এই চিকিৎসক জানান, সোমবার বিকালে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড বিএনপি চেয়ারপারসনের টেস্ট রিপোর্ট পর্যালোচনা করেন। পরে সিসিইউতে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। এরপরই তাকে কেবিনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড।
মেডিকেল বোর্ডের সভায় খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জোবাইদা রহমানসহ অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
এর আগে রবিবার এভারকেয়ার হাসপাতালের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সফলভাবে খালেদা জিয়ার বুকে পেসমেকার বসিয়েছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ জানান, খালেদা জিয়া তিনটি ব্লকেজসহ হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ড তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২২ সালের ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে একাধিক ব্লক ধরা পড়ে। এই ব্লকেজগুলোর মধ্যে একটিতে ৯৫ শতাংশ ব্লক ছিল এবং সেই সময় স্টেন্ট বসানো হয়েছিল।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে দ্রুত সিসিইউতে ভর্তি করা হলে যেখানে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।