সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অভিবাসী শ্রমিক পাঠাতে ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এবার কী সমস্যা হয়েছে তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। দায়ী হলে অবশ্যই তাদের বিচার হবে।’
বুধবার (৫ জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এর আগে বিকাল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।
সম্পূরক প্রশ্নে জাপার সংসদ সদস্য বলেন, মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকের ভাগ্য অনিশ্চিত। অনুমতিসহ সবকিছু প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১৭ হাজার কর্মীকে ৩১ মের মধ্যে পাঠানো যায়নি।
মালয়েশিয়ায় অভিবাসী কর্মী পাঠাতে যোগসূত্র সৃষ্টির কথা তুলে ধরে মুজিবুল হক বলেন, মালয়েশিয়া ১৪টি দেশ থেকে জনশক্তি পায় এবং বাংলাদেশ ছাড়া সব দেশের ক্ষেত্রে লাইসেন্সধারী সব এজেন্সি জনশক্তি পাঠাতে পারে। শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই বেশ কয়েকটি নির্ধারিত এজেন্সি এই সুযোগ পায়।
যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চান মুজিবুল হক।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সব কর্মীকে বিশেষ ফ্লাইট ও অন্যান্য নিয়মিত ফ্লাইটে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বাদ পড়েছেন অনেকেই। কী কারণে (মালয়েশিয়া যেতে না পারার) তা তদন্ত করে দেখা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই আমরা আলোচনা করি এবং ঠিক করি কতজন লোক যাবে, তখন দেখা যায় আমাদের দেশে একদল লোক, যারা জনবল নিয়ে কাজ করে, তারা তাড়াহুড়ো করে লোক পাঠানোর চেষ্টা করে।’
বিদেশে কর্মী পাঠাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কিছু লোক দালালের মাধ্যমে বিদেশে যেতে চায়। তখন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তারা।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহফিজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঢাকা শহরের যানজট এবং এর ফলে বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, টাইমবাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০৩০-এর আওতায় মেট্রোরেল লাইন চালু করা হলে এই অর্থ সাশ্রয় হবে এবং অর্থনীতিতে পরিপূর্ণ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ এর পুরো অংশের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেল চলাকালীন দৈনিক ভ্রমণের সময় ব্যয় বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং পরিচালনা ব্যয় বাবদ প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফরিদুন নাহার লাইলীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, একটি চক্র বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক ও যুদ্ধাপরাধী চক্র এবং বিএনপি-জামায়াত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অব্যাহতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এর একটি বড় অংশ বিভিন্ন উন্নত দেশে বসবাস করছে। তারা মূলত ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিকৃত সংবাদ ছড়াচ্ছে।’
এসব ভুল তথ্য ও গুজব বন্ধে দেশে-বিদেশে আইনি, কারিগরি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সাইবার জগতের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় তার সরকারের একটি পৃথক ‘সাইবার পুলিশ ইউনিট’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।