ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার আহ্বান

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

 

 

আমানতকারীদের অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে জনসাধারণকে এসব সম্পত্তি কেনার বিষয়ে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (২৮ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকে আমানতকারীদের অর্থ পরিশোধে লুট হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রুপটি বিভিন্ন ভূসম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এসব সম্পদ বিক্রি ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ‘রাষ্ট্রের স্বার্থে’ এস আলম গ্রুপের কাছ থেকে জমি ও সম্পত্তি না কেনার পরামর্শ দেন।

ড. মনসুর আরও জানান, সুশাসন নিশ্চিত করতে ছয়টি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে, শিগগিরই আরও পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে। এই নতুন বোর্ডগুলো রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসাবে ব্যাংকগুলো পরিচালনা করবে। যদি তারা প্রয়োজন মতো কাজ না করে তবে আরও পরিবর্তন আনা হবে।

মুদ্রাস্ফীতির বিষয় তুলে ধরে গভর্নর বলেন, দেশে সাম্প্রতিক বড় বন্যার কারণে আগামী দুই থেকে তিন মাসে মুদ্রাস্ফীতি কমার সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, ‘তবে আমি আশাবাদী আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উভয় পক্ষের প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ নীতিগত ব্যবস্থা এবং একটি স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন বজায় রাখা। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে।’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে ড. মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এক ডলারও বিক্রি হবে না। তবে আমরা বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে সরকারি ব্যয় মেটাতে সোনালীর ব্যাংকের মতো ব্যাংকে সরবরাহ করছি।’

তিনি আরও বলেন, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি), বিদ্যুতের ঋণ এবং সার আমদানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় মেটাতে ডলারের চাহিদা ব্যবস্থাপনার দিকে মনোনিবেশ করা হচ্ছে।

আমানতকারীদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে গভর্নর ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান এবং গণপ্রত্যাহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন। সবাই একযোগে টাকা উত্তোলন করলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংক তা পরিচালনা করতে পারবে না। শুধু যেটুকু প্রয়োজন তা তুলে নিন।’

ধুঁকতে থাকা ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের আশ্বস্ত করে ড. মনসুর বলেন, সংস্কার চলছে এবং সময় লাগবে।

তিনি বলেন, আপনারা উচ্চ সুদের হার বা অন্য কোনো কারণে এসব ব্যাংকে টাকা রেখেছেন। এখন, আপনার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করার ওপর জোর দিয়ে যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন গভর্নর।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার আহ্বান

আপডেট সময় : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

 

 

আমানতকারীদের অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে জনসাধারণকে এসব সম্পত্তি কেনার বিষয়ে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (২৮ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকে আমানতকারীদের অর্থ পরিশোধে লুট হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রুপটি বিভিন্ন ভূসম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এসব সম্পদ বিক্রি ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ‘রাষ্ট্রের স্বার্থে’ এস আলম গ্রুপের কাছ থেকে জমি ও সম্পত্তি না কেনার পরামর্শ দেন।

ড. মনসুর আরও জানান, সুশাসন নিশ্চিত করতে ছয়টি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে, শিগগিরই আরও পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে। এই নতুন বোর্ডগুলো রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসাবে ব্যাংকগুলো পরিচালনা করবে। যদি তারা প্রয়োজন মতো কাজ না করে তবে আরও পরিবর্তন আনা হবে।

মুদ্রাস্ফীতির বিষয় তুলে ধরে গভর্নর বলেন, দেশে সাম্প্রতিক বড় বন্যার কারণে আগামী দুই থেকে তিন মাসে মুদ্রাস্ফীতি কমার সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, ‘তবে আমি আশাবাদী আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উভয় পক্ষের প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ নীতিগত ব্যবস্থা এবং একটি স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন বজায় রাখা। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে।’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে ড. মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এক ডলারও বিক্রি হবে না। তবে আমরা বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে সরকারি ব্যয় মেটাতে সোনালীর ব্যাংকের মতো ব্যাংকে সরবরাহ করছি।’

তিনি আরও বলেন, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি), বিদ্যুতের ঋণ এবং সার আমদানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় মেটাতে ডলারের চাহিদা ব্যবস্থাপনার দিকে মনোনিবেশ করা হচ্ছে।

আমানতকারীদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে গভর্নর ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান এবং গণপ্রত্যাহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন। সবাই একযোগে টাকা উত্তোলন করলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংক তা পরিচালনা করতে পারবে না। শুধু যেটুকু প্রয়োজন তা তুলে নিন।’

ধুঁকতে থাকা ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের আশ্বস্ত করে ড. মনসুর বলেন, সংস্কার চলছে এবং সময় লাগবে।

তিনি বলেন, আপনারা উচ্চ সুদের হার বা অন্য কোনো কারণে এসব ব্যাংকে টাকা রেখেছেন। এখন, আপনার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করার ওপর জোর দিয়ে যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন গভর্নর।