ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হামিদা হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও, বিক্ষোভ এবং মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনরা। আসামিদের ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারে আল্টিমেটাম, না হলে বৃহৎ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা । ১৯ আগস্ট সোমবার বেলা ১২ টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সামনে প্রথমে মানববন্ধন করে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বোয়ালমারী থানা কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন বিচার প্রার্থীরা। ঘটনার এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ ও পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেন তারা।
এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালি সার্কেল) মো. ইমরুল হাসান ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বিক্ষোভকারিদের সাথে কথা বলেন ও তাদের আশ্বস্ত করেন যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। বিক্ষোভকারীরা এসময় পুলিশকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করার সময় বেঁধে দেন। অন্যাথায় বড় ধরনের কর্মসূচির হুশিয়ারি জানান তারা। পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে আন্তরিক রয়েছে জানিয়ে আসামিদের গ্রেফতারে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন সহকারী পুলিশ সুপার ।
উল্লেখ হামিদা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূ বাপের বাড়ি বেড়াতে এসে মাঠে ছাগলে ধান খাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। হামিদা বেগম উপজেলার গুনবহা গ্রামের দরিহরিহরনগর গ্রামের মো. ইসরাফিল মোল্যার মেয়ে। পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের হাসিবুল সরদারের সাথে দু বছর আগে তার বিবাহ হয়। এ দম্পতির ৭ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
নিহত হামিদা বেগমের মা রিজিয়া বেগম বলেন- প্রতিপক্ষ শাহাদাত মোল্যার ক্ষেতের ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে আমার এক মেয়ে মাহিমাকে প্রথমে মারপিট করে পরে তারা দলবদ্ধ হয়ে আমার বাড়ির উপরে হামলা চালায়, আমার মেয়ে হামিদা তাদের হাতে পায়ে ধরে মাফ চাইলেও গুনবহা ইউনিয়নের মৎসজীবী লীগের সভাপতি পাষণ্ড মো. তৈয়বুর রহমান, চানমিয়া, শাহাদত, ইউনুসরা আমার মেয়েকে বাঁচতে দেয়নি। তারা তাকে বাঁশের লাঠি, রড, জিআই পাইব, হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটায় ও লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে বুকের উপর আঘাত করতে থাকে। তাদের আঘাতে আমার কলিজার টুকরো অজ্ঞান হয়ে গপলে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। পরে বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। আমি আমার মেয়ে হামিদা’র হত্যাকারিদের ফাঁসি চাই।
বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো শহিদুল ইসলাম বলেন – ঘটনার খবর পেয়ে আমি সে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই, পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের মামলা করতে বলি। আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। আশাকরি দ্রুতই আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. ইমরুল হাসান বলেন- এ মামলার অগ্রগতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের টিম মাঠে রয়েছে, যত সময় আসামিরা গ্রেপ্তার না হচ্ছে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।