ঢাকা ১০:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘সরকার প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনবে’

  • ইউএনবি
  • আপডেট সময় : ০৩:১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

 

সরকার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা এবং হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, নাশকতা ও নাশকতাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ নিশ্চিত করছে সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কথিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং নিরপরাধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রতিশোধ বা হয়রানি না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ জুলাই গঠিত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশন ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার ঘটনাসহ হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার সংশ্লিষ্ট ঘটনার দায় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি বিভাগীয় তদন্তও করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকে কাজ করতে পারে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বাড়াবাড়ি বা অন্যায়ের আশঙ্কা এড়াতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অব্যাহত ভুল ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সরকার কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছে বিবৃতিতে-

এক: অধিকাংশ শান্তিপূর্ণ ও ইস্যুভিত্তিক ছাত্র আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কোনো সুযোগ নেই।

দুই: সরকার পুনর্ব্যক্ত করছে যে, সব ধরনের হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার হবে। নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে যারাই সংশ্লিষ্ট থাক না কেন নির্বিশেষে দায়ীদের চিহ্নিত করা হবে।

তিন: সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় মোতায়েন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

চার: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নজরদারি, নির্দিষ্ট স্থানে আটকে পড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি চলাচলের সুবিধার্থে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পাঁচ: অসাবধানতাবশত একটি সাদা আর্মড-পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) মোতায়েনের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। যেটিতে জাতিসংঘের চিহ্নটি মুছে ফেলতে রঙ ব্যবহার করা হলেও তা দৃশ্যমান ছিল। ওই এপিসিটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে দ্রুতই তা পরিষেবা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে জাতিসংঘের প্রতীক ব্যবহার করে আইন প্রয়োগকারী পরিবহনের অন্যান্য ছবির প্রমাণের স্বপক্ষে কোনো ভিত্তি নেই।

ছয়: ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বর্তমানে সম্পূর্ণ কার্যকারিতাসহ চালু করা হয়েছে। অস্থিরতা এবং সহিংসতার পুরো সময়কালে তারভিত্তিক এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগসহ যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমগুলো কার্যকর ছিল।

সাত: প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সবসময়ই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং কারফিউ চলাকালীন অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী ও গণমাধ্যম কর্মীদের এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার যেকোনো মূল্যে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মতামতের অধিকার সমুন্নত রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।’

পরিশেষে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা সংঘটিত অভূতপূর্ব ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সাধারণ জনগণের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‘সরকার প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনবে’

আপডেট সময় : ০৩:১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

 

সরকার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা এবং হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, নাশকতা ও নাশকতাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ নিশ্চিত করছে সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কথিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং নিরপরাধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রতিশোধ বা হয়রানি না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ জুলাই গঠিত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশন ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার ঘটনাসহ হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার সংশ্লিষ্ট ঘটনার দায় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি বিভাগীয় তদন্তও করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকে কাজ করতে পারে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বাড়াবাড়ি বা অন্যায়ের আশঙ্কা এড়াতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অব্যাহত ভুল ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সরকার কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছে বিবৃতিতে-

এক: অধিকাংশ শান্তিপূর্ণ ও ইস্যুভিত্তিক ছাত্র আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কোনো সুযোগ নেই।

দুই: সরকার পুনর্ব্যক্ত করছে যে, সব ধরনের হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার হবে। নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে যারাই সংশ্লিষ্ট থাক না কেন নির্বিশেষে দায়ীদের চিহ্নিত করা হবে।

তিন: সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় মোতায়েন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

চার: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নজরদারি, নির্দিষ্ট স্থানে আটকে পড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি চলাচলের সুবিধার্থে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পাঁচ: অসাবধানতাবশত একটি সাদা আর্মড-পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) মোতায়েনের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। যেটিতে জাতিসংঘের চিহ্নটি মুছে ফেলতে রঙ ব্যবহার করা হলেও তা দৃশ্যমান ছিল। ওই এপিসিটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে দ্রুতই তা পরিষেবা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে জাতিসংঘের প্রতীক ব্যবহার করে আইন প্রয়োগকারী পরিবহনের অন্যান্য ছবির প্রমাণের স্বপক্ষে কোনো ভিত্তি নেই।

ছয়: ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বর্তমানে সম্পূর্ণ কার্যকারিতাসহ চালু করা হয়েছে। অস্থিরতা এবং সহিংসতার পুরো সময়কালে তারভিত্তিক এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগসহ যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমগুলো কার্যকর ছিল।

সাত: প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সবসময়ই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং কারফিউ চলাকালীন অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী ও গণমাধ্যম কর্মীদের এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার যেকোনো মূল্যে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মতামতের অধিকার সমুন্নত রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।’

পরিশেষে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা সংঘটিত অভূতপূর্ব ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সাধারণ জনগণের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাবে।