ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্র আন্দোলনে হওয়া সব মামলা ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে: আইন উপদেষ্টা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

 

ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দেশজুড়ে যত মামলা হয়েছে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে সবগুলো প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাজধানীতে হওয়া হয়রানিমূলক সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা করছেন তিনি।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে ছাত্র হয়রানিমূলক মামলাগুলোর নিষ্পত্তি চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের সবাই দায়িত্বে না থাকায় এটি সম্ভব হয়নি। এখন সব পুলিশ দায়িত্ব নিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে মন্ত্রীরা কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। ছাত্র আন্দোলনে হত্যা ঘটনায় সাবেক সরকার প্রধানসহ যারাই জড়িত থাকেন, তাদের ছাড় দিব না। বিচার আওতায় আনা হবে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার কার্য শুরু হলে আসামি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে আসতে পারবে।’

এছাড়া ও গায়েবিসহ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক যত মামলা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সাংবাদিকরা তাদের প্রতিবেদনে গায়েবি মামলার প্রমাণ দিলেও দুর্ভাগ্যবশত আমাদের বিচার বিভাগের চোখে তা পড়েনি। কেন পড়েনি, আমি খুব অবাক হতাম। আল্লাহ আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন তা জানার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবরার হত্যা মামলাসহ যত গুম হয়েছে, এসব বিচার করা হবে। সাংবাদিকদের হয়রানি করার জন্য যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলো বাতিল ও আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার উদঘাটন করা হবে।’

এছাড়াও সাংবাদিক রোজিনার নামে মামলা প্রত্যাহার করা হবে এবং তার পাসপোর্টও ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা আরও জানান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নামে মামলাও প্রত্যাহার করা হবে।

আসিফ নজরুল জানান, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আর জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এসব ঘটনার তদন্ত করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

আয়নাঘরের ভুক্তভোগীদের সহায়তা দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আয়নাঘরে যারা গুমের শিকার হয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসার সুযোগ তাদের রয়েছে। কাজেই তারা গুমের মামলা করতে পারেন।’

গুম মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত আখ্যায়িত করে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে কোনো ব্যক্তি মামলা করতে পারেন। রাষ্ট্রও পারে, ভুক্তভোগীরাও মামলা করতে পারেন। পরে রাষ্ট্রীয়ভাবেও আমরা উদ্যোগ নিতে পারি। এটা নিয়ে আমরা সিরিয়াসলি ভাবিনি। আমরা এখন জুলাই হত্যাকাণ্ডে মনোযোগ দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, আয়নাঘরে গুমের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনোভাবেই বিষয়টিকে ছোট করে দেখছি না। অবশ্যই, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের যে কেউ আমাদের সহায়তা চাইলে, আমরা সেটা করব।

এছাড়াও বিচার বিভাগের সব কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসাব আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সব বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে অবস্থিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব বিবরণী আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছি।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্র আন্দোলনে হওয়া সব মামলা ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে: আইন উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

 

ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দেশজুড়ে যত মামলা হয়েছে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে সবগুলো প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাজধানীতে হওয়া হয়রানিমূলক সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা করছেন তিনি।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে ছাত্র হয়রানিমূলক মামলাগুলোর নিষ্পত্তি চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের সবাই দায়িত্বে না থাকায় এটি সম্ভব হয়নি। এখন সব পুলিশ দায়িত্ব নিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে মন্ত্রীরা কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। ছাত্র আন্দোলনে হত্যা ঘটনায় সাবেক সরকার প্রধানসহ যারাই জড়িত থাকেন, তাদের ছাড় দিব না। বিচার আওতায় আনা হবে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার কার্য শুরু হলে আসামি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে আসতে পারবে।’

এছাড়া ও গায়েবিসহ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক যত মামলা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সাংবাদিকরা তাদের প্রতিবেদনে গায়েবি মামলার প্রমাণ দিলেও দুর্ভাগ্যবশত আমাদের বিচার বিভাগের চোখে তা পড়েনি। কেন পড়েনি, আমি খুব অবাক হতাম। আল্লাহ আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন তা জানার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবরার হত্যা মামলাসহ যত গুম হয়েছে, এসব বিচার করা হবে। সাংবাদিকদের হয়রানি করার জন্য যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলো বাতিল ও আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার উদঘাটন করা হবে।’

এছাড়াও সাংবাদিক রোজিনার নামে মামলা প্রত্যাহার করা হবে এবং তার পাসপোর্টও ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা আরও জানান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নামে মামলাও প্রত্যাহার করা হবে।

আসিফ নজরুল জানান, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আর জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এসব ঘটনার তদন্ত করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

আয়নাঘরের ভুক্তভোগীদের সহায়তা দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আয়নাঘরে যারা গুমের শিকার হয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসার সুযোগ তাদের রয়েছে। কাজেই তারা গুমের মামলা করতে পারেন।’

গুম মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত আখ্যায়িত করে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে কোনো ব্যক্তি মামলা করতে পারেন। রাষ্ট্রও পারে, ভুক্তভোগীরাও মামলা করতে পারেন। পরে রাষ্ট্রীয়ভাবেও আমরা উদ্যোগ নিতে পারি। এটা নিয়ে আমরা সিরিয়াসলি ভাবিনি। আমরা এখন জুলাই হত্যাকাণ্ডে মনোযোগ দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, আয়নাঘরে গুমের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনোভাবেই বিষয়টিকে ছোট করে দেখছি না। অবশ্যই, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের যে কেউ আমাদের সহায়তা চাইলে, আমরা সেটা করব।

এছাড়াও বিচার বিভাগের সব কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসাব আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সব বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে অবস্থিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব বিবরণী আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছি।