ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে হাইকোর্টে রিট

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৬:১৬:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

 

দেশ থেকে স্থায়ীভাবে জাতীয় মাছ ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে এবার হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

রিটে বাণিজ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।

এছাড়া ইলিশ রপ্তানি থেকে বিরত থাকতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, সে প্রশ্ন তুলে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে রিটে।

সেইসঙ্গে উপযুক্ত বা সাশ্রয়ী দামে দেশে ইলিশ মাছ বিক্রির ব্যবস্থা করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বিবাদীদের আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী মাহমুদুল হাসান। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলেন। নইলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল সে নোটিশে।

কিন্তু এ নোটিশ দেওয়ার ৩ দিনের মাথায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতে দ্বিতীয় দফায় আরও ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় দুই হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। ভারতে রপ্তানির জন্য দুই দফায় মোট দুই হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

রিটকারী আইনজীবী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিবাদীদের কাছ থেকে নোটিশের জবাব না পেয়ে ও ইলিশ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে না পড়ায় রিট আবেদনটি করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।’

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই মাছ কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। মধ্যবিত্তরাও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের গড় দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের বাজারে ইলিশের দাম আরও বেড়েছে। আরও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে দেশের বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবার প্রায় ৫ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেতে এরই মধ্যে শতাধিক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তা থেকে পর্যায়ক্রমে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা শুরু। সাধারণত দুর্গাপূজা উপলক্ষেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয়।

২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ২০১৯ থেকে দেশটিতে আবার ইলিশ রপ্তানি চালু করা হয়।

গত বছর ভারতে ১ হাজার ৪০০ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছিল।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী আর নেই

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে হাইকোর্টে রিট

আপডেট সময় : ০৬:১৬:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

দেশ থেকে স্থায়ীভাবে জাতীয় মাছ ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে এবার হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

রিটে বাণিজ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।

এছাড়া ইলিশ রপ্তানি থেকে বিরত থাকতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, সে প্রশ্ন তুলে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে রিটে।

সেইসঙ্গে উপযুক্ত বা সাশ্রয়ী দামে দেশে ইলিশ মাছ বিক্রির ব্যবস্থা করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বিবাদীদের আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী মাহমুদুল হাসান। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলেন। নইলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল সে নোটিশে।

কিন্তু এ নোটিশ দেওয়ার ৩ দিনের মাথায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতে দ্বিতীয় দফায় আরও ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় দুই হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। ভারতে রপ্তানির জন্য দুই দফায় মোট দুই হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

রিটকারী আইনজীবী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিবাদীদের কাছ থেকে নোটিশের জবাব না পেয়ে ও ইলিশ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে না পড়ায় রিট আবেদনটি করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।’

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই মাছ কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। মধ্যবিত্তরাও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের গড় দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের বাজারে ইলিশের দাম আরও বেড়েছে। আরও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে দেশের বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবার প্রায় ৫ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেতে এরই মধ্যে শতাধিক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তা থেকে পর্যায়ক্রমে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা শুরু। সাধারণত দুর্গাপূজা উপলক্ষেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয়।

২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ২০১৯ থেকে দেশটিতে আবার ইলিশ রপ্তানি চালু করা হয়।

গত বছর ভারতে ১ হাজার ৪০০ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছিল।