পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে জয়ের পর আশা করা হচ্ছিল চেন্নাইয়ে ভারতকে আরও শক্তিশালী চ্যালেঞ্জ দেবে বাংলাদেশ। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়, দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায়।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ভালো ফলাফলের জন্য ব্যাটসম্যানদের আরও ভালো করা দরকার ছিল, কিন্তু তারা পারেননি। তবে তিনি আশা করছেন, কানপুরে পরের ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরবে।
বাংলাদেশের প্রথম চমকপ্রদ বিষয়টি ছিল টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। ১৯৮২ সালের পর চেন্নাইয়ে এরকম সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি কাউকে। নাজমুল জানান, সকালে উইকেটের আর্দ্রতা কাজে লাগানোর আশা করেছিলেন তারা।
এই সিরিজে বাংলাদেশ দল তিনজন পেসারকে মাঠে নামায়। এমন একটি সিদ্ধান্তই পাকিস্তানের বিপক্ষে ভাল ফলাফল এনে দিয়েছিল। এটি অবশ্যই তাদের একই ধরনের ফলাফলের প্রত্যাশায় ভারতেও উৎসাহিত করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটি ভালো ফল বয়ে আনেনি।
ভারতীয় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার মনে করেন, তিন পেসারের আক্রমণ ভারতের বিপক্ষে যৌক্তিক নয়। পিচ কিছুটা বাঁক থাকলে স্পিনের বিপক্ষে ভারতের অস্বস্তি থাকায় আরেকজন স্পিনারকে দলে নিলে বাংলাদেশ ভালো করত বলে মনে করেন তিনি।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর বিশেষজ্ঞ হিসেবে সঞ্জয় বলেন, ‘আপনি যখন ভারতে খেলবেন, তখন আপনি তিন পেসার খেলাতে চাইবেন না। ‘প্রথম দিন, তৃতীয় বা চতুর্থ দিনের মধ্যে সবুজ পিচ পেলেও পিচ স্পিনের জন্য বেশি উপযোগী, স্পিনকে আরও উৎসাহিত করে। তাই আমি মনে করি দুজনই (পেসার) যথেষ্ট।’
সঞ্জয় আরও বলেন, তিনি তাইজুল ইসলামকে পরবর্তী খেলায় অন্তভুর্ক্ত করতে দেখছেন, যা ২৭ সেপ্টেম্বর কানপুরে শুরু হবে।
সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের দুর্বল পারফরম্যান্সের তিনি উন্নতি দেখতে চান।
তিনি বলেন, ‘সাকিব, মুশফিকুর রহিম… আমি জানি তারা তরুণ নয়, কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে খেলছে, তবে যখন একটি বড় সিরিজ আসে তখন তাদের মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে হবে, বিশেষ করে মুশফিক এবং লিটন দাসকে।’
এই সিরিজের আগে ভারতের বিপক্ষে ৫০-এর বেশি গড়ে ব্যাট করেছেন মুশফিক। কিন্তু চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টেস্টে দলের যখন তাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তখন তিনি ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন।
চেন্নাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির সুবাদে ৩৭৬ রান করে ভারত। ভারত বড় সংগ্রহ করলেও বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ তার দ্বিতীয় পাঁচ উইকেটের জন্য স্পটলাইটের কিছুটা অংশ দখল করতে সক্ষম হন, যা ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশি বোলারদের প্রথম পাঁচ উইকেটও ছিল।
বাংলাদেশের হয়ে গত কয়েকটি সিরিজে পেসাররা ভালো করলেও ব্যাটসম্যানরা তাদের ধারাবাহিকতা রাখতে পারেননি। তারা তাদের প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানের ছোট স্কোর নিয়ে করেছিল। যা তাদের পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। যেখান থেকে তারা আর উঠে আসতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানের লিড দিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয় ভারতের হাতে।
তাই কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে ভালো ফলের জন্য বাংলাদেশি ব্যাটারদের পরিকল্পিতভাবে খেলতে হবে। যদি তারা আবার তা করতে ব্যর্থ হয় তবে এই সিরিজ থেকে তাদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুব কমই থাকবে।