বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে তার দেশ বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করবে বলে বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তারা (সুইজারল্যান্ড) বলেছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের যে কোনও উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানাবে এবং এ বিষয়ে তারা সহযোগিতা করবে। এটা ভালো খবর।’
বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের পতনের পর দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, তারা (বিএনপি) বারবার বলেছে বাংলাদেশ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) এত বেশি অর্থ পাচার করেছে যে দেশের রিজার্ভ একেবারে তলানিতে গেছে। প্রত্যেক নাগরিক তাদের দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব অনুভব করছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ যদি এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনতে না পারে, তাহলে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা খুব কঠিন হবে। ‘আমরা তাদের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি। তারা নিশ্চয়ই আমাদের সহযোগিতা করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়নি, তবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যুক্তিসঙ্গত সময় লাগবে।
তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটা সবাই প্রত্যাশা করে, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আছেন তারাও এটা বিশ্বাস করেন।’
এ ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দ্বিমত নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, বৈঠকে সুইস রাষ্ট্রদূত বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রোডম্যাপ ও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিএনপির মতামত ও ভাবনা জানতে চান।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিসহ কাঠামো ভেঙে পড়েছে। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী এবং এখানে আমরা কী করতে পারি তা জানতে চেয়েছেন তিনি।’
দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুঃখজনক অবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে সঠিক পথে আনা যায় এবং পুনরুদ্ধার করা যায় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ‘তারা (সুইজারল্যান্ড) এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।’
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে সঠিক শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে সুইজারল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।