সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামীকাল রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করতে চান।
স্মারকলিপিতে নতুন আইন বা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ‘কোটা বৈষম্য’ দূর করতে জরুরি পার্লামেন্ট অধিবেশনের আহ্বান জানাবে।
আন্দোলনকারীরা এক পুলিশ কর্মকর্তার দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মামলাটিকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ আখ্যা দিয়ে দাবি জানান।
শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঢাকার গণপদযাত্রা ছাড়াও রাজধানীর বাইরের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পেশ করবেন।
রবিবার বেলা ১১টায় মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার অধিভুক্ত কলেজসহ ঢাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটক থেকে শুরু হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের দাবিতে চলমান শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে। এ সমস্যা সমাধানে জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন বসার অনুরোধ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপিও দেব।’
আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, সরকার পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনকে ব্যবহার করে আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা করছে। সরকারের উচিত ছিল শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপে বসা এবং এই সংকট নিরসনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। আমরা বলতে চাই, এ ধরনের পরিকল্পনা আমাদের প্রতিবাদ থামবে না।’
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে পুলিশ ‘কোনো ক্ষয়ক্ষতির’ খবর পায়নি। ‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে রেকর্ড আছে। আমরা এই আকস্মিক ঘটনার জন্য পুলিশের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করছি। এ ধরনের হুমকি আমাদের দমাতে পারবে না। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তারা যদি মামলা করতে চায় তাহলে ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে মামলা করতে পারে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আপনাদের পেনশন স্কিমের জন্য ক্লাস বর্জন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আপনাদের সহযোগিতা করেছে। এখন সময় এসেছে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন করার। আপনাদের দাবি মানা হলেও আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নেব না। আমরা দেখতে চাই না যে আমাদের শিক্ষকরা আমাদের ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে এবং তীব্রতর করতে হবে, তবে এর দায় সরকারের। সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিলে আমরা রাজপথে থাকব না। এ অবস্থার দায় সরকারের, শিক্ষার্থীদের নয়।’