পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে নিষ্প্রভ থাকার পর সেমিফাইনালে অবশেষে জ্বলে উঠল ফ্রান্স। শুরুতেই গোল করে সমালোচকদের দাঁতও ভেঙে দিল। তবে স্পেনের ভ্রাতৃপ্রতিম ফুটবলের সামনে আক্রমণের পর আক্রমণ করে আর একবারের জন্যেও রক্ষণের লাল তালা ভাঙতে পারলেন না এমবাপ্পে-দেম্বেলেরা।
অপরদিকে, আসরজুড়ে দলীয় পারফরম্যান্স, ক্ষিপ্র গতি আর প্রতিভার জোরে দুর্দান্ত ফ্রান্তের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়ে গেল স্পেন। মাঝে চার মিনিটে দুই গোল করে ব্যবধান গড়ে দিলেন দুই স্প্যানিশ তরুণ। একজন ১৬ বছরের স্কুলপড়ুয়া লামিন ইয়ামাল, অপরজন ২৬ বছর বয়সী লাইপসিগের প্রতিভাবান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার দানি অলমো।
ফলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সেমিফাইনালে এসে অবশেষে নিজেদের মেলে ধরলেও স্পেনের ‘ব্যান্ড অব ব্রাদার্সের’ কাছে হার স্বীকার করে নিয়ে বাড়ির পথ ধরতে হয়েছে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যদের।
মঙ্গলবার রাতে মিউনিখের আলিয়ান্স আরেনা স্টেডিয়ামে ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের স্পেন।
এদিন ম্যাচের নবম মিনিটেই কিলিয়ান এমবাপ্পের বাড়ানো দারুণ এক ক্রসে হেড দিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ফ্রান্সের রাঁদাল কোলো মুয়ানি।
এরপর ফ্রান্সকে চেপে ধরে ১২ মিনিট পরই সমতায় ফেরে স্পেন। অসাধারণ লামিন ইয়ামালের একক নৈপুণ্যে বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনা সমর্থকদের অসংখ্যবার দেখা লিওনেল মেসির সিগনেচার শটে গোল আদায় করেন লামিন।
স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোনের লং পাস মাঝমাঠে থেকে ধরে লামিনকে সামনে পাস বাড়ান আলভারো মোরাতা। বক্সের বাইরে ফ্রান্সের একগাদা খেলোয়াড় সামনে রেখে মাঝামাঝি অবস্থান থেকে গোলে শট নেন তিনি। বাঁকানো সেই শট জাদুর মতে বাঁ পোস্ট ছুঁয়ে এবং ওপরের পোস্টের কোণা দিয়ে ঠিকানায় পৌঁছে যায়।
এই গোলে ইউরোর সেমিফাইনালে তো বটেই টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে যান এই কিশোর ফুটবলার। এর চার মিনিট পরই দানি অলমোর দুর্দান্ত এক শটে ম্যাচে এগিয়ে যায় স্পেন।
হেসুস নাভাসের বক্সে মধ্যে দেওয়া ক্রস ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা ফিরিয়ে দিলে তা বক্সের সামান্য বাইরে পেয়ে যান অলমো। সেখান থেকে ফ্রান্সের রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে দারুণ এক ড্রিবলিংয়ে পরাস্ত করে ডান পাশ দিয়ে বক্সে ঢুকে ৬ গজ বক্সের বাইরে ডান পাশ থেকে দূরের পোস্টে জোরালো শট নেন দানি অলমো। শটটি ক্লিয়ার করার আগেই জুল কুন্দের পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়।
শুরুতে তা কুন্দের আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণনা করা হলেও পরে শটটির গতি ও অলমোর কীর্তি বিবেচনায় দানির নামের পাশেই গোলটি যুক্ত করে ভিএআর।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য অসংখ্যবার চেষ্টা করেছিল ফ্রান্স। কিন্তু স্পেনের দলীয় ঐক্য ও সঠিক সময়ে কোচের সঠিক সিদ্ধান্তে বারবার ম্যাচের রাশ টেনে ধরে শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধান ধরে রেখেই ম্যাচ শেষ করে স্পেন।
আগামী রবিবার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত একটায় দ্বিতীয় সেমিফাইনাল বিজয়ী নেদারল্যান্ডস অথবা ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।