ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেষ ধাপে ভোটগ্রহণ বুধবার। এই ধাপে দেশের ৬০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। এদিন সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
নিয়ম অনুযায়ী ভোটের ৩৬ ঘণ্টা আগেই ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়। সে অনুযায়ী সোমবার মধ্যরাতেই ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে। এদিকে ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জন অর্থাৎ মোট ৭২১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে এক কোটি ৪৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮২০ ভোটার তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগ পাবেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, শেষ ধাপে ৪ জেলার ৬ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে এবং ৫৪টি উপজেলায় ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হবে।
দুর্গম এলাকার কেন্দ্রগুলোতে মঙ্গলবার রাতেই ব্যালট পেপারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলোতে ভোটের দিন ভোরে এসব পাঠানো হবে।
নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৎপর থাকবে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিনজন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ জন আনসার সদস্য থাকবেন এবং ছয়টির বেশি বুথ আছে এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার সদস্য থাকবেন। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চারজন পুলিশ সদস্য থাকবেন। আনসার থাকবে তিনজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ২০ থেকে ২১ সদস্য থাকবেন।
এবার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। গড়ে পাঁচটি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এই মোবাইল ফোর্স গঠন করা হয়েছে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। সব বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটা সমন্বয় সেল গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ ৯৯৯-এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকছেন বিজিবি সদস্যরা।
চতুর্থ ধাপের ৬০ উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে উচ্চ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর ৬০ উপজেলায় সোমবার মধ্যরাত থেকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, চতুর্থ ধাপের ভোটের মধ্য দিয়েই এবারের উপজেলা নির্বাচন শেষ হওয়ার কথা; কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্থগিত উপজেলাগুলোর মধ্যে ২০টি উপজেলায় আগামী ৯ জুন ভোট নেওয়া হবে। সেজন্য ওই ভোটের মধ্য দিয়েই ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন শেষ হবে। ওই ২০টি উপজেলার প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে মাঠে রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮ মে দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা নির্বাচন ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পড়ে।