বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের কথিত দুর্নীতি ও অপকর্মের জন্য সরকার দায়ী।
এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, সরকার দেশকে এমন ভয়াবহ অবস্থায় নিয়ে গেছে যে, গণমাধ্যমে একজন সাবেক পুলিশ প্রধানের দুর্নীতির অসংখ্য চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) তাকে (বেনজির) লালন-পালন করেছেন। ‘অনেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পরও আপনারা তাকে আইজিপি বানিয়েছেন।’
ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশে লুটপাট, চুরি ও নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগে একজন সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন,এটা কি শুধু তাদের (আজিজ ও বেনজির) দায়? এ দায় জোর করে ক্ষমতায় থাকা এই সরকারের।
সাবেক সেনাপ্রধান ও আইজিপির অপকর্মের দায় নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু একজন আজিজ আর একজন বেনজির নয়। আপনারা আজিজ, বেনজিরের মতো অসংখ্য মানুষকে লালন-পালন করেছেন, যারা জনগণের অর্থ লুটপাট করছে।’
ফখরুল আরও অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও অনুসারীরা কুখ্যাত বর্গিদের (সপ্তদশ শতাব্দীতে বাংলা অঞ্চলে ব্যাপক লুটপাটে লিপ্ত মারাঠা সাম্রাজ্যের ঘোড়সওয়ার) মতো জনগণের অর্থ লুটপাট করছে। তাদের একমাত্র কাজ বাংলাদেশের সম্পদ লুণ্ঠন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে সম্পদ গড়ে তোলা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য দলটি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করার দাবিতে বিএনপিসহ ৬৩টি বিরোধী দল দীর্ঘদিন ধরে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, সরকার নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক, কারণ তারা খুব ভালো করেই জানে যে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে তারা ১০ শতাংশ আসনও পাবে না।
এমন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে চলমান আন্দোলন বেগবান করতে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেগে ওঠার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এটা বৃথা যাবে না।
স্মরণসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জিয়াউর রহমান স্বৈরশাসন বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা এখন জিয়াউর রহমান ও তার বিধবা স্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করছেন।
আব্বাস বলেন, অনেকেই ভেবেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এ‘ই দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বিএনপিকে হাজার বছর টিকে থাকতে হবে।’