বরিশাল ডিভিশনাল জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিডিজে) সদস্য ও সময় টেলিভিশনের সাবেক জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক মিজানুর রহমান খবিরকে হেনস্থাকারী ও হুমকিদাতা কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসীম ও সহযোগীদের বিচার দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
জানা গেছে, গত ২১ মে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া থেকে বামের রাস্তা ধরে মোল্লারহাট এলাকার গুদারাঘাটে ঘুরতে যান সাংবাদিক মিজানুর রহমান খবির ও মডেল-অভিনেতা তানভির। এসময় ফেরির মত দেখতে একটি ছোট ট্রলার দেখে কৌতুহলবশত ভিডিও করেন তিনি। কারণ এটি দিয়ে সহজেই দেশের যে কোন নৌপথে ছোট পরিবহন ও যাত্রী বহন সম্ভব। অবশ্য এর আগে প্রয়োজনীয় কথা বলে নেন টোল উঠানো লোকের সঙ্গে। ভিডিও করাকালীন ঘাটের অদূরে বসা তিনজন লোকের মধ্যে একজন তার কাছে উগ্রস্বরে কারণ জানতে চান এবং বাজে মন্তব্য শুরু করেন। ৪ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ভিডিও শেষে উদ্দেশ্য ও কারণ বুঝাতে তাদের কাছে গেলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান তারা।
ফেসবুক টাইমলাইনে সময় টিভির সাবেক সিনিয়র রিপোর্টার ও এখন টিভির সাবেক যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান খবির বিস্তারিত তুলে ধরেন উপযুক্ত প্রমাণসহ। ঘাটে মহিলারা আছে অজুহাতে কার অনুমতি নিয়ে কাজ করছিস ‘তোর মা বোনকে নিয়া আয়-ভিডিও করবো, তোর তখন কেমন লাগবো, বলে বসা থেকে দাঁড়িয়ে যান একজন, পাশ থেকে অন্য দুজন ভিডিও ডিলিট করা এবং ‘এখনও ফোন আছাড় দিয়া ভাঙ্গোছ নাই’ বলে ভয়ভীতি দেখায়। ‘পরে মূল অভিযুক্ত কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি জসীম উদ্দীন নিরব বলে জানতে পারি। কয়েক মিনিটের মধ্যে তারা আরও হুমকি ও গালিগালাজ করে। আমার সাবেক কর্মস্থলের ভিডিও দেখালে সে জানতে চায় সময় টিভি কার? আমি সিটি গ্রুপের কথা বললে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়। এটা কামরুল ইসলামের! তুই জানোস না কিছু! মিথ্যা কথা কছ, ভাগ এখান থেকে তাড়াতাড়ি, ভিডিও ডিলিট কর! সাংবাদিক কেন ফোন দিয়ে ভিডিও করছে এর জবাবে আমি বলি, এটা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে করা, আমি এখানে তো বেড়াতে এসেছি, দেখে মনে হল মানুষের কাজে লাগবে তাই ভিডিও করলাম।‘ জসীম তখন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ‘এখান থেকে তাড়াতাড়ি যা, কেরানীগঞ্জ তো করবিই না দেশের কোথাও যেন তোরে ভিডিও করতে না দেখি’।
এরপর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জকে অবগত করা হলে তিনি অভিযুক্তকে শনাক্ত করেন। উপস্থিত কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা জসীমের বিষয়ে নানা তথ্য জানান। ওসি সাহেবকে মূল ভিডিও দেখালে তিনিও নিশ্চিত করেন এখানে খারাপ বা আপত্তি তোলার মত কিছু নেই। তখন তিনি নিজে ও স্থানীয় এক প্রবীণ রাজনীতিকের মাধ্যমে জসীমের কাছে কারণ জানতে চান। তাদের সঙ্গেও অনমনীয় আচরণ করেন জসীম। একপর্যায়ে আমার কাছে উগ্রস্বরে দুঃখ প্রকাশ করলেও তার ব্যাপক ঔদ্ধত্য প্রকাশ পায়।
বিষয়টি নিয়ে বিডিজেএ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদও জানাচ্ছে সংগঠনটি। জনবহুল স্থানে পর্যটক বেশে থাকা সংবাদকর্মীর সঙ্গে করা আচরণ ও হুমকির সঠিক তদন্ত ও ন্যায় বিচার কামনা করছে সংগঠনটি।
এ বিষয় অভিযুক্ত জসিম বলেন, সামান্য কথার কাটাকাটি হয়েছে। আমরা তার সঙ্গে কোন খারাপ আচরণ করিনি। এ বিষয় ঢাকা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনিক বলেন, ভাই এই ঘটনা এখন আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তবে যেই হোক সাংবাদিকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে পারে না। এই বিষয় আমরা জসিমের সঙ্গে কথা বলবো। আপনি একটু সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ঢাকা দক্ষিন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সোহাগকে একাধিক বার মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।